শোনো গো সজনী ভাবি দিন-রজনী মনে তো বোঝে না বন্ধু ছাড়া বিনে প্রাণপাখি কেমনে থাকি ঝুরে দুই আঁখি বহে ধারা ॥ ভালোবেসেছিল মনপ্রাণ নিল পরে ঠেলিয়া দিল পাগলপাড়া তার আশায় রয়েছি কত দুঃখ সয়েছি আমি যে হয়েছি প্রেমের মড়া ॥ মনে ভাবি তাই আমার কেহ নাই ছেড়ে গেল সবাই আপন যারা প্রাণবন্ধে বাসে ভিন আসিল…
Author: Maruf Hasan
প্রাণবন্ধু আসিতে গো
প্রাণবন্ধু আসিতে গো সখি আর কতদিন বাকি চাতকপাখির মতো আমি আশায় চেয়ে থাকি গো— সখি, আর কতদিন বাকি ॥ ভালোবেসে দুঃখ দেওয়া ভালো হলো নাকি পাগল মনকে আর কতদিন প্রবোধ দিয়ে রাখি গো ॥ নিবিড় রাতে কেউ নয় সাথে একা যখন থাকি কত কথা মনে পড়ে ঝুরে দুটি আঁখি গো ॥ আসবে ঘরে আশা করে…
ও সখিগণ বলো এখ
ও সখিগণ বলো এখ করি কী উপায় বন্ধুবিনে প্রাণপাখি উড়ে যেতে চায় ॥ না জেনে প্রাণবন্ধুর সঙ্গে প্রেম করিলাম মনোরঙ্গে কলঙ্কের দাগ লাগল অঙ্গে মোছা নাহি যায় ॥ কত ভালোবেসেছিল মন-প্রাণ কাড়িয়া নিল আপন হয়ে দুঃখ দিল বন্ধু শ্যামরায় ॥ জানি না কী হবে শেষে মন কান্দে পাগলের বেশে কলঙ্কিনী দেশ-বিদেশে লোকে মন্দ গায় ॥…
কও সজনী গুণমণি
কও সজনী গুণমণি কার কুঞ্জে রইল আমার কুঞ্জে আসবে বলে আমারে কইল ॥ আসবে বলে আশায় রইলাম ফুলবিছানা সাজাইলাম আশাতে নিরাশা হইলাম নিশি শেষ হইল ॥ জ্বালাইয়া মোমের বাতি জাগিয়া পুহাইলাম রাতি আসিল না প্রাণের সাথি উপায় কী বল ॥ করিম বলে কী করব আর পুড়িয়া হইলাম অঙ্গার বিচ্ছেদের আগুনে আমার অঙ্গ দহিল ॥ আপনার…
সোনার অঙ্গ পুড়ে অঙ্গার
সোনার অঙ্গ পুড়ে অঙ্গার হইল যার লাগিয়া গো কই রইল গো নিষ্ঠুর কালিয়া ॥ কুমারে যে বাসন পোড়ে সই গো পইনে সাজাইয়া ভিতরে তার আগুন দিয়া সই গো কুমার রয় সরিয়া গো ॥ যে-দুঃখ অন্তরে সই গো রেখেছি ভরিয়া বুক চিরে দেখাইবার হইলে আমি দেখাইতাম চিরিয়া গো ॥ আসি বলে চলে গেল সে আর আইল…
যে দুঃখ মোর মনে
যে দুঃখ মোর মনে বন্ধে তাহা জানে আপন বন্ধে দিলো দুঃখ মন বেঁধে পাষাণে — বন্ধে তাহা জানে ॥ নয়ন নিল রূপবাণে মন নিল তার গানে মন নিল তার গানে ফুল ছেড়ে কলঙ্কী হইলাম যৌবন দিলাম দানে ॥ মন বাঁধা তার প্রেমভোরে দিবানিশি টানে দিবানিশি টানে প্রাণবন্ধুর বিচ্ছেদ-জ্বালা সয় না আমার প্রাণে ॥ আর কিছু…
মনপ্রাণ দিয়াছি সোনা বন্ধুরে
মনপ্রাণ দিয়াছি সোনা বন্ধুরে বলে বলুক লোকে মন্দ যার যত মনে ধরে ॥ যেদিন হতে প্রেম করেছি কুলমান ছেড়ে দিয়েছি মনে মনে ভাবিতেছি বন্ধে জানি কী করে ॥ ধর্ম কর্ম সবই ছাড়া হয়েছি পাগলের ধারা বন্ধু বিনে মন-মনুরা থাকতে চায় না পিঞ্জরে ॥ আর কোনো বাসনা নাই শুধু প্রাণবন্ধুরে চাই দুঃখ নাই যদি মরে যাই…
প্রাণবন্ধুর পিরিতে আমার মন উদাসী
প্রাণবন্ধুর পিরিতে আমার মন উদাসী মন উদাসী, গলে পিরিতের ফাঁসি আমি হয়েছি দোষী ॥ প্রেমের বাজারে, প্রেম বিকায় ঘরে-ঘরে ন্যায্যমূল্যে খরিদ করে খরিদ্দারে প্রেমিক যারা, প্রেম কিনে গো তারা আগ বাজারে যায় যারা প্রেমবিলাসী ॥ বাজারে গেলাম, ভাও জানতে চাইলাম ভাগ্যগুণে সরল এক মহাজন পাইলাম একটাকা মণ, প্রেম বিরাশির ওজন একমণ কিনে যে-জন একসের পায়…
কালার প্রেমে কেন পাগল হইলাম
কালার প্রেমে কেন পাগল হইলাম সহে না জ্বালা আমি কুলবালা কলঙ্কের ডালা মাথায় লইলাম ॥ বাজায় শ্যামে বাঁশি মন করে উদাসী নয়নজলে ভাসি বলে রাধা নাম । প্রাণে বাঁচা দায় করি কী উপায় সুখের আশায় কত দুঃখ সইলাম ॥ সদা যায় আসে নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে নয়নে ভাসে প্রেমময় শ্যাম । সে নহে তো কঠিন পাব তারে একদিন…
কালো রূপ দেখিতে চমৎকার
কালো রূপ দেখিতে চমৎকার কী দিব রূপের তুলনা নাই কিছু জগৎ মাঝার ॥ যে চায় কালো রূপের পানে মনপ্রাণ সহিতে টানে গো ভুলতে পারে না জীবনে করে সদা হাহাকার ॥ মুছলে ছবি মিটে না তো হৃদয়ে আছে অঙ্কিত গো পোড়া প্রাণে দুঃখ যত রূপ দেখলে থাকে না আর ॥ কালো আমার মাথার বেণি কালো আমার…
কও রে পথিক ভাই
কও রে পথিক ভাই তুমি নি দেখেছ আমার প্রাণবন্ধু কানাই – যার লাগিয়া পাগল হইয়া কাঁদিয়া বেড়াই ॥ ভাই রে ভাই, হাতে বাঁশি মাথে চূড়া পীতবসন পরা নয়নে প্রেমের রেখা মুনির মনোহরা কী দিব রূপের তুলনা ত্রিভুবনে নাই রূপ দেখিয়া পাগল হইয়া কুলে দিলাম ছাই ॥ ভাই রে ভাই, দেখে থাকলে কও রে বন্ধু কোন…
জীবন-অন্ত কালে গো সখি
জীবন-অন্ত কালে গো সখি আসিল না কালা আপন বলে নিলাম গলে শ্যামকলঙ্কের মালা গো- সখি আসিল না কালা ॥ বন্ধু বিনে দুই নয়নে বহে নদী-নালা শাশুড়ি ননদি বাদী জ্বালার উপর জ্বালা গো ॥ কার কাছে কী বলিব ভাবি যে নিরালা কুল ছাড়িলাম মাথায় নিলাম শ্যামকলঙ্কের ডালা গো ॥ করিম বলে কে খুলিবে মনোবাক্সের তালা ভাবি…
বন্ধু তো আইল না গো
বন্ধু তো আইল না গো সখি দুঃখ বলব কারে পিরিত করে বন্ধে মোরে কোন বিচারে ছাড়ে গো- সখি দুঃখ বলব কারে ॥ জেনে আপন জীবন-যৌবন দিলাম আমি যারে দুঃখ দিল ছেড়ে গেল যৌবনের আষাঢ়ে গো ॥ কইতে নারি সইতে নারি যাই না কারো ধারে কেউ নাই আমার কই যাব আর বন্ধে যদি মারে গো ॥…
আর কতদিন গাইব গো সখি
আর কতদিন গাইব গো সখি প্রাণবন্ধুর গান প্রেমের নেশায় বন্ধুর আশায় যৌবন হলো অবসান ॥ সখি আমি একা ছিলাম প্রাণবন্ধুর সঙ্গ নিলাম ছেড়ে দিলাম জাতিকুলমান আপন জেনে প্রাণবন্ধুরে সোনার যৌবন করলাম দান ॥ কাছে নিল ভালোবেসে এখন থাকে দূর বিদেশে পাগল বেশে কাঁদে মনপ্রাণ দেখা দেয় না খবর নেয় না করিয়াছে অভিমান ॥ সে যদি…
ওগো প্ৰাণসই
ওগো প্ৰাণসই বন্ধু বিনে মনের বেদন কারে কই যার লাগি কলঙ্কের ডালা হাতে তুলে মাথায় লই – বন্ধু বিনে মনের বেদন কারে কই ॥ বাঁচে না প্রাণ তারে ছাড়া হয়েছি পাগলের ধারা প্রেম করিয়া সর্বহারা কুল ছেড়ে কলঙ্কী হই ॥ আমায় ছেড়ে গেল দূরে থাকে বন্ধু মধুপুরে আশা দিয়া বন্ধে মোরে গাছে তুলে নিল মই…
বন্ধুহারা জিতে মরা মনপ্রাণ উতলা
বন্ধুহারা জিতে মরা মনপ্রাণ উতলা সখি গো, কেমন করে ঘরে রই একেলা ॥ সখি গো, থাকি আমি পরার ঘরে কত মন জুগাইলাম তারে গলে লইলাম কলঙ্কের মালা শাশুড়ি ননদি বাদি এই যন্ত্রণায় সদায় কাঁদি বন্ধে আরও দিলো দ্বিগুণ জ্বালা ॥ সখি গো, প্রেম করা বড় জ্বালা না করছে-জন আছে ভালা যে করছে তার সোনার অঙ্গ…
পিরিতে শান্তি মিলে না
পিরিতে শান্তি মিলে না মন মিলে মানুষ মিলে সময় মিলে না ॥ প্রেমিক যারা জিতে মরা আসলে সর্বস্বহারা যে যারে চায় তারে ছাড়া প্রাণে বাঁচে না ॥ পিরিত করে মন-উল্লাসে ঠেকল যে-জন ভালোবেসে কালনাগে দংশিলে বিষে মন্ত্র মানে না ॥ শোনো ওগো প্রাণসজনী কী সুখে যায় দিন-রজনী মন জানে আর আমি জানি অন্যে জানে না…
পিরিত করা প্রাণে মরা গো
পিরিত করা প্রাণে মরা গো সখি, আগে আমি জানি না – প্রেম করা যে এই লাঞ্ছনা ॥ সখি গো, বলিতে পারি না মুখে যে-দুঃখ মোর পোড়া বুকে গো আঁধার দেখি দিবালোকে গো সখি, ঘুমাইলে ঘুম আসে না ॥ সখি গো, প্রেম করিলে শান্তি মিলে বলে তাহা কোন পাগলে গো বিনা কাষ্ঠে আগুন জ্বলে গো সখি,…
বলো সখি প্রাণপাখি
বলো সখি প্রাণপাখি কোন দেশে রইল এ জীবনে ভুলিবে না আমারে কইল ॥ প্রেম করে গেল ছাড়িয়া মন-প্রাণ নিল কাড়িয়া আমারে প্রাণে মারিয়া কার সঙ্গ লইল ॥ লাগল গলে প্রেমের ফাঁসি জগতে রইল হাসি করে আমায় কুলবিনাশী নিদারুণ হইল ॥ আশায় জীবন হলো গত আশা পূর্ণ হইল না তো প্রেম করিয়া করিম কত দুঃখ সইল…
প্রাণবন্ধু বিনে গো
প্রাণবন্ধু বিনে গো সখি দুঃখ এলো মনে কুলমান নিল দুঃখ দিল আমার প্রাণধনে গো সখি দুঃখ এলো মনে ॥ ফাঁকি দিয়া মন নিয়া লুকাইয়া কোন বনে রইল হাসি গলে ফাঁসি প্রেম করে তার সনে গো সখি দুঃখ এলো মনে ॥ কথা দিয়াছিল বন্ধে ভুলবে না জীবনে তাই তো তারে মনে পড়ে শয়নে স্বপনে গো সখি…
আসি বলে গেল বন্ধু আইল না
আসি বলে গেল বন্ধু আইল না যাইবার কালে সোনা বন্ধে নয়ন তুলে চাইল না ॥ আসবে বলে আশায় রইলাম আশাতে নিরাশা হইলাম বাটাতে পান সাজাই থইলাম বন্ধু এসে খাইল না ॥ সুজন বন্ধুৱে চাইলাম মনে বড় ব্যথা পাইলাম আমি শুধু তার গান গাইলাম সে আমার গান গাইল না ॥ ভুলব তারে কেমন করে এই আশাতে…
পিরিতি করিয়া বন্ধে
পিরিতি করিয়া বন্ধে ছাড়িয়া গেল আগে তো জানি না বন্ধের মনে কী ছিল ॥ শোনো ওগো সহচরী ধৈর্য না ধরিতে পারি না দেখিলে প্রাণে মরি উপায় কী বলো ॥ প্রেম কি হয় যথাতথা প্রেম করা কি মুখের কথা প্রেমে যে দারুণ ব্যথা অন্তরে দিলো ॥ বাউল আবদুল করিম বলে প্রাণ জ্বলে বিচ্ছেদানলে প্রাণবন্ধু যাবার কালে…
আমার মনের দুঃখ যত গো
আমার মনের দুঃখ যত গো সখি প্রাণবন্ধে জানে প্রাণবন্ধুর বিচ্ছেদ আমার দুঃখ বয়ে আনে গো সখি প্রাণবন্ধে জানে ॥ কুলনাশা বাঁশির ধ্বনি আসে যখন কানে উদাসিনী করে মোরে বন্ধুর বাঁশির গানে গো সখি প্রাণবন্ধে জানে ॥ বিচ্ছেদজ্বালা বড় জ্বালা সয় না আমার প্রাণে করিম বলে বন্ধু পাইলে কাজ নাই কুলমানে গো সখি প্রাণবন্ধে জানে ॥…
বড় সাধ করে গো সখি
বড় সাধ করে গো সখি পিরিত করেছি আমি একূল সেকূল দুই কূল ছেড়ে প্রেমসাগরে ভেসেছি ॥ প্রেমসাগরের অতল জলে ঢেউ খেলে গো প্রাণবন্ধের নাম সম্বলে হাইল ধরিয়া বসেছি ॥ সখি আমার চাওয়া-পাওয়া সুখের ঘরে শূন্য দেওয়া গো আমার শুধু নৌকা বাওয়া যতদিন বেঁচে আছি ॥ বন্ধে যারে দয়া করে অকূলে কূল দিতে পারে গো করিম…
আমি সাধ করে পরেছি গলে
আমি সাধ করে পরেছি গলে শ্যামকলঙ্কের মালা যায় যাবে কুলমান যাবে প্রাণ গেলেও ভালা গো সখি – শ্যামকলঙ্কের মালা ॥ সেও পাগল, করেও পাগল পাগলামি তার খেলা তার কারণে দুই নয়নে বহে নদী-নালা গো সখি ॥ বাউল আবদুল করিম বলে শোনো গো সরলা সে বিনে আর কে খুলিবে প্রেমবাক্সের তালা গো সখি ॥ আপনার পছন্দের…
দুঃখ কার কাছে জানাই
দুঃখ কার কাছে জানাই বিচ্ছেদের আগুনে অঙ্গ পুড়ে হলো ছাই পাইলে তারে প্রেমসাগরে খেলতাম প্রেমের লাই ॥ আপন জেনে প্রাণবন্ধুরে বুকে দিলাম ঠাঁই দেখিলে জীবন বাঁচে নইলে মরে যাই ॥ শুইলে স্বপনে দেখি জাগিয়া না পাই উদাসিনী হয়ে তখন প্রাণবন্ধুর গান গাই ॥ জীবের জীবন পরশরতন প্ৰাণৰস্থ কানাই করিম বলে, না পাইলে বাঁচার উপায় নাই…
গাড়ি চলে না, চলে না
গাড়ি চলে না, চলে না চলে না রে গাড়ি চলে না ॥ চড়িয়া মানবগাড়ি যাইতেছিলাম বন্ধুর বাড়ি মধ্য পথে ঠেকল গাড়ি উপায়-বুদ্ধি মিলে না ॥ মহাজনে যত্ন করে পেট্রল দিল টেংকি ভরে গাড়ি চালায় মন-ড্রাইভারে ভালো-মন্দ বোঝে না ॥ গাড়িতে পেসিঞ্জারে অযথা গণ্ডগোল করে হেন্ডিম্যান কন্ডাক্টারে কেউর কথা কেউ শোনে না ॥ পার্সগুলো সব ক্ষয়…
মাটির পিঞ্জিরায় সোনার ময়না রে
মাটির পিঞ্জিরায় সোনার ময়না রে তোমারে পুষিলাম কত আদরে । তুমি আমার আমি তোমার এই আশা করে – তোমারে পুষিলাম কত আদরে ॥ কেন এই পিঞ্জিরাতে তোমার বসতি কেন পিঞ্জিরার সনে তোমার পিরিতি আসা-যাওয়া দিবারাতি ঘরে বাহিরে ॥ তোমার ভাবনা আমি ভাবি নিশিদিন দিনে দিনে পিঞ্জিরা মোর হইল মলিন পিঞ্জিরা ছাড়িয়া একদিন যাইবে উড়ে ॥…
আমি তো জানি না আমার
আমি তো জানি না আমার কখন কী হবে বেলা গেল সন্ধ্যা হলো ভাবি নীরবে ॥ জীবন পাই মায়ের গর্ভেতে একবিন্দু পানি হতে আসিলাম এই জগতে যাইব কবে ॥ বন্দি হলেম মায়াজালে গাই গান তাল-বেতালে বোঝে না মনমাতালে ঠেকলাম স্বভাবে ॥ কাম ক্রোধ লোভ মোহ আর ছয়জনে করে অত্যাচার উপায় নাই বেঁচে থাকার কলঙ্ক রবে ॥…
ধনে হীন মানে হীন আমি
ধনে হীন মানে হীন আমি আপনজনে বাসে ভিন- শোধ হলো না মহাজনের ঋণ ॥ জন্ম নিলাম মানবকুলে আছি ভবমায়ায় ভুলে দিনে দিনে তনু হইল হীন । জানেন আল্লা রাসুলে কী হবে হিসাবের দিন ॥ পিতামাতার কাছে ঋণী মন জানে আর আমি জানি আর জানেন এলাহি আমিন । মনমানুষের কাছে ঋণী ভাবি যারে নিশিদিন ॥ এই…
আমি বলি আমার
আমি বলি আমার আমার আমার কেহ নয় আমি আমার হলেম না তো পর কি আপন হয় ॥ আসা-যাওয়া একা একা ভববাসে কয়দিন থাকা কে কার পাইবে দেখা দেহ যখন হইবে লয় ॥ জন্ম জরা যম-যাতনা এছাড়া তো কেউ দেখি না আজ আছি কাল থাকব কি না এই তো মনে ভয় ॥ আসা-যাওয়া কী কারণে ভাবি…
আমি তুমি, তুমি আমি
আমি তুমি, তুমি আমি অন্তর্যামী অন্তরেতে অনুমানে দূরে জেনে দিন গেল মোর পাগলামিতে ॥ স্বরূপে রূপ মিশাইয়া মীমের পর্দায় ঢাকনি দিয়া রঙ মাখিয়া সঙ সাজিয়া আছ তুমি এ ধরাতে ॥ তুমি গেলে আমার মরণ তা যদি হলো না বারণ আমি জীব তুমি জীবন আসা যাওয়া একই সাথে ॥ কিসের আমি কিসের আমার তুমি বিনে কে…
আমি আছি আমার মাঝে
আমি আছি আমার মাঝে আমি করি আমার খবর আমি থাকলে সোনার সংসার আমি গেলে শূন্য বাসর ॥ এ জগতে আমি মূল এছাড়া মিটে না গোল আমি বৃক্ষ আমি ফুল আমি মধু আমি ভ্রমর ॥ আমি আঁধার আমি আলোক আমি আশেক আমি মাশুক যে বোঝে না সে বুঝুক কেবা আপন কেবা রে পর ॥ আমি আছি…
মানবতত্ত্বের কী মাহাত্ম্য
মানবতত্ত্বের কী মাহাত্ম্য বোঝে কয়জনে মানবতত্ত্ব প্রকাশিল অতি সন্ধানে ॥ বোঝা যায় না মানবলীলা কী ভেদে করেছে খেলা খুলেছে যার প্রেমের তালা সে জানে মনে ॥ আপনাকে ভালোবাসি বিশ্বাস করে হও সাহসী আপন ঘরে মক্কা-কাশী আছে গোপনে ॥ করিম বলে, ও পাগল মন আপন ঘরে চৌদ্দ ভুবন চোখ থইয়া তুই অন্ধ যখন দেখবে কেমনে ॥…
আমি গান গাইতে পারি না
আমি গান গাইতে পারি না গানে মিলে প্রাণের সন্ধান গান গাওয়া মোর হলো না ॥ জানি না ভাব-কান্তি গাইতে পারি না সে গান যে গান গাইলে মিলে আঁধারে আলোর সন্ধান গান গাইলেন লালন রাধারমণ হাসন রাজা দেওয়ানা ॥ আরকুম শাহ ফকির শিতালং বলেছেন মারফতি গাও সৈয়দ শাহনুরের গানে শুকনাতে দৌড়িল নাও করিম বলে প্রাণ খুলে…
এলিম শিখলে আলেম হয় না
এলিম শিখলে আলেম হয় না আমল না হলে । দেহমন পবিত্র হলে ইমানের বাতি জ্বলে ॥ শুনি জ্ঞানী-গুণীর বচন চরিত্র পবিত্র ভূষণ নিজে হলে সংশোধন মন তখন পথে চলে ॥ লম্বা দাড়ি টুপি পিরহানে আল্লা-নবির গুণগানে মনে যদি অহংকার আনে সব যাবে রসাতলে ॥ আসছ ভবে যাইতে হবে চিরদিন কি ভবে রবে সুখ-দুঃখ ভোগ করিবে…
কেউ বলে দুনিয়া দোজখ
কেউ বলে দুনিয়া দোজখ কেউ বলে রঙের বাজার কোনো কিছু বলতে চায় না যে বুঝেছে সারাসার ॥ এ সংসারের ভোজবাজি বোঝে না মন বড় পাজি আসল কাজে হয় না রাজি বুঝাইলে বোঝে না আর ॥ এই ভবে আসিল যত আসলে কেউ রইল না তো আসা-যাওয়া অবিরত যাবার বেলা কেউ নয় কার ॥ মহামানব আসলেন যারা…
ঘৃণা লজ্জা ভয় থাকিতে
ঘৃণা লজ্জা ভয় থাকিতে প্রেম হবে না যে করে আত্মসমর্পণ তার প্রেমে আর গোল বাঁধে না ॥ প্রেমের বাতাস লাগে যার গায় দেখিলে তারে চেনা যায় প্রমাণ দেয় ভাবভঙ্গিমায় আত্মসুখের ধার ধারে না ॥ পঞ্চরসে মাখা যেজন রসিক সুজন সে মহাজন অন্তরে তার পরশরতন সে করে স্বরূপ সাধনা ॥ শুদ্ধপ্রেম যার ভাগ্যে ঘটে আঁধারে তার…
সাহস বিনা হয় না কখনো
সাহস বিনা হয় না কখনো প্রেম-পিরিতি প্রেমে মন দিলাম প্রাণ দিলাম করতে হয় এই প্রতিশ্রুতি ॥ প্রেমিকের নাই আশয়-বিষয় করে না কুলমানের ভয় তার ভাবে সে রয় সব সময় জ্ঞান থইয়া পাগলের মতি ॥ প্রেমভাবে যে যারে চায় লক্ষ্য স্থির হইলে সেথায় আপনাকে হারিয়ে যায় দেখিলে সেই রূপজ্যোতি ॥ বাউল আবদুল করিম বলে প্রেমে বিচ্ছেদ…
আগে বাইদ্যার সঙ্গ না করে
আগে বাইদ্যার সঙ্গ না করে কালসাপিনী ধরতে গেলাম সাহসের জোরে ফণা ধরল ছোবল মারল বিষে অঙ্গ কেমন করে ॥ ওঝা-বৈদ্যের কাছে গেলাম কত শতবার কিছুতেই আর শান্তি হয় না দিল বেকারার ডাক শোনে না মন্ত্র মানে না ঝাড়লে বিষ উজান ধরে ॥ বাইদ্যা যারা জানে তারা সাপ ধরিবার কল বাঁশির গানে ডেকে আনে বাঁশিতে কৌশল…
এয়ার কন্ডিশন মেশিন আছে
এয়ার কন্ডিশন মেশিন আছে মায়ের কাছে মাইয়ায় কেউরে হাসায় কেউরে কাঁদায় কলের পুতুল কলে নাচে ॥ চুম্বকে করে আকর্ষণ পুরুষের ধন করে হরণ শীত-গরম করে নিয়ন্ত্রণ মানুষ তৈয়ার করিতেছে ॥ স্রষ্টার যে সৃষ্টিধারা এই ভবে আসিল যারা মায়ের গর্ভে সবাই গড়া এতে কি আর দ্বিমত আছে ॥ মাইয়াতে রয়েছে শান্তি ঠিক করে নেও ভাবকান্তি দূর…
হিংসাখোরগণ বলে এখন
হিংসাখোরগণ বলে এখন আবদুল করিম নেশাখোর ধর্মকর্মের ধার ধারে না গান-বাজনাতে রয় বিভোর ॥ হিংসা-অহংকার করা মমিনের কর্তব্য নয় আদমকে হিংসা করিয়া মকরম আবেদ শয়তান হয় বুঝিতে হয় আসল বিষয় হিংসা নিন্দা করে দূর ॥ হিংসাখোরগণ ধার্মিক নয় করে দেখো সুবিচার অহিংসা পরম ধর্ম জ্ঞানী বলেন বারেবার আল্লা-রাসুলের বাজার কেউ ধনী কেউ দিনমজুর ॥ মসজিদকে…
মন মুসল্লি ভাই
মন মুসল্লি ভাই শরিয়তে আছ তুমি তরিকতে নাই তরিকতে নাই তুমি হকিকতে নাই ॥ হকিকতের হক বিচারে মন পবিত্র হলে পরে দেখতে পাবে আপন ঘরে আল্লা আলেকসাঁই ॥ হও যদি খাঁটি মুসলমান বাহির ভিতর করো সমান যে হবে মুনাফিক নাদান নরকে তার হবে ঠাঁই ॥ আসা-যাওয়া করে দমে দিনে দিনে আয়ু কমে কয় বাউল আবদুল…
ও মনমাঝি রে
ও মনমাঝি রে অকূল সাগরে তোমার নাও অকূলেতে কূল মিলিবে মুর্শিদ যদি পাও ॥ জীবনরবি অস্ত যাবে বেলার দিকে চাও নাম স্মরণে মনেপ্রাণে সারি গান গাও ॥ ছয় রিপুকে বাধ্য করে প্রেমের বৈঠা বাও ভাঙা তরী বিপদ ভারি সাবধানে চালাও ॥ ভালো-মন্দ বলুক লোকে করিও না রাও করিম বলে প্রাণ সঁপে দাও মুর্শিদের পাও ॥…
মনমাঝি তোর মানবতরী
মনমাঝি তোর মানবতরী ভবসাগরে ভেসে যায় বেলা গেলে সন্ধ্যা হলে পাড়ি দেওয়া হবে দায় ॥ যারা সুজন ব্যাপারী সুসময়ে ধরে পাড়ি দয়াল নামে গেয়ে সারি অনুরাগের বৈঠা বায় ॥ ভবসাগরের পাকে পড়ে কেউ বাঁচে কেউ ডুবে মরে ভক্তজনে আশা করে অকূলে কূল পাইতে চায় ॥ সামনে আঁধার রাতি কেউ নহে কার সঙ্গের সাথি মুর্শিদ ইমানের…
ভবসাগরের নাইয়া
ভবসাগরের নাইয়া মিছা গৌরব করো রে পরার ধন লইয়া একদিন তোমার যাইতে হবে এই সমস্ত থইয়া রে পরার ধন লইয়া ॥ পরার ঘরে বসত করো পরার অধীন হইয়া আপনি মরিয়া যাইবায় এই ভব ছাড়িয়া রে পরার ধন লইয়া ॥ কী ধন লইয়া আইলায় ভবে কী ধন যাইবায় লইয়া ভবে আইয়া ভুলিয়া রইলায় ভবের মায়া পাইয়া…
মন পাগলা তুই লোকসমাজে
মন পাগলা তুই লোকসমাজে লুকি দিয়ে থাক মনমানুষ তোর মনমাঝে আছে রে নির্বাক ॥ মনে মনে করো ভাবনা সঙ্গী বিবেক বিবেচনা মন না দিলে মন মিলে না দিয়ে হাজার লাখ ॥ লাগে না তো ডাকাডাকি তোর সঙ্গে তার মাখামাখি পিঞ্জিরাতে প্রেমের পাখি যত্ন করে রাখ ॥ অন্তর্যামী আছে যেজন সে জানে তোর অন্তর কেমন চায়…
আসল কাজে ফাঁকি দিয়া রে
আসল কাজে ফাঁকি দিয়া রে মন তুই আর চলিবে কতদিন শোধ হলো না মহাজনের ঋণ ॥ মন রে, ভবের বাজারে আইয়া ছয় রিপুর সঙ্গ পাইয়া রে কামিনী কাঞ্চন চাইয়া রে মন তোর আপনজন বাসিলে ভিন ॥ মন রে, চিন্তা করে দেখতে হবে কেউ তো রইল না ভবে রে একা একদিন যাইতে হবে রে মন তোর…
আল্লার বাড়ি মক্কাশরিফ
আল্লার বাড়ি মক্কাশরিফ বোঝে না মন পাগলে ব্যক্তি নয় সে শক্তি বটে আছে আকাশ-পাতালে ॥ খোদে খোদা প্রতি ঘটে আল্লা আছে বিশ্বময় কালবে মোমিন আর্শে আল্লা হাদিসে তার প্রমাণ রয় কী করে পাই তার পরিচয় নিজে শুদ্ধ না হলে ॥ আল্লা-নবি কী বলেছেন এই হলো আসল বিষয় শা-রগ হতে আরও কাছে বলছেন আল্লা দয়াময় তাহলে…
অকূলে পড়িয়া ডাকি
অকূলে পড়িয়া ডাকি ওগো দয়াময় তোমার আশা নাম ভরসা আমার যে আর কিছু নয় ॥ পড়ে আছি ঘোর আঁধারে আর আমি ডাকিব কারে তুমি থাকতে ভবপারে কাঙালের কিসের ভয় ॥ দয়াময় নামটি ধরো বাঁচাও মারো ভাঙো গড়ো সকলই যে তুমি করো সৃষ্টি এবং স্থিতি-লয় ॥ দয়া করো বলে তুমি য়াল বলে ডাকি আমি তুমি যে…
কও গো দয়াল
কও গো দয়াল এখন আমার কী গতি গেল সন্ধ্যা হলো কেউ নাই মোর সঙ্গের সাথি ॥ একাকী চলেছি পথে সামনে আঁধার রাতি নির্ধনের ধন পরশরতন তুমি আঁধারের বাতি ॥ কেউ বলে দয়াল দাতা কেউ বলে জগৎপতি করিম বলে তুমি আমার দেহরথের সারথি ॥ আপনার পছন্দের তালিকায় যোগ করুন
ডাকছে কাঙাল ওগো দয়াল
ডাকছে কাঙাল ওগো দয়াল কেমন করে যাই ওপারে আর কতদিন থাকব দয়াল এই ভব কারাগারে ॥ আমি বা কার কেবা আমার আপন আমি বলব কারে কত আমি চলে গেল খুঁজলে কি আর মিলে তারে ॥ গেলে কেউ ফিরে আসে না ডুবলে তরী আর ভাসে না সুখ-দুঃখে কাঁদে হাসে না কেউ কি তারে রাখতে পারে ॥…
নাম সম্বলে ছাড়লাম তরী
নাম সম্বলে ছাড়লাম তরী কূল দাও কি ডুবিয়া মরি ॥ তুমি কাঁদাও তুমি হাসাও তুমি ডুবাও তুমি ভাসাও তুমি মারো তুমি বাঁচাও ভাঙাগড়া সব তোমারই ॥ পড়ে দয়াল ঘোর বিপদে ভার দিয়াছি তোমার পদে পাড়ি দাও নির্বিবাদে তুমি নিজে হও কাণ্ডারি ॥ আবদুল করিম ভাবছে এবার মিছে কেবল আমার-আমার নৌকা তোমার পুঁজি তোমার আমি তোমার…
কাঙালের বন্ধু রে
কাঙালের বন্ধু রে কাঙাল জেনে দয়া করো মোরে আশায় নিরাশ করিও না বলি করজোড়ে ॥ আকাশে নয় পাতালে নয় নহে তুমি দূরে স্বরূপেতে আছ জানি ভক্তের অন্তরে ॥ কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ সঙ্গে সঙ্গে ঘোরে ভাণ্ডারের ধন করে হরণ নিল মদনা চোরে ॥ কামসাগরে ছাড়লাম তরী যৌবনের আষাঢ়ে রিপুর বশে বশী হয়ে পড়লাম ঘোর আঁধারে ॥ সঙ্গীহারা অধমরা…
প্রাণনাথ হে
প্রাণনাথ হে মনপ্রাণ তোমারে দিলাম না ভবমায়ায় ভুলে আমি তোমার খবর নিলাম না- মনপ্রাণ তোমারে দিলাম না ॥ শিশুকালে ছিলাম ভালো আদরে মায়ের কোলে যৌবনে মায়ার বাঁধনে পড়িয়াছি গোলমালে ভবসাগরের অতল জলে কূল-কিনারা মিলে না ॥ তুমি স্রষ্টা তোমার সৃষ্টি তুমি তো জগতের মূল তুমি যারে করো দয়া অকূলে তার মিলে কূল দরবারে করে থাকি…
আল্লার নাম লইলাম না রে
আল্লার নাম লইলাম না রে ও মন ভুলে পড়ে ও নাম লইলাম না লইলাম না লইলাম না রে ॥ আল্লা আল্লা বলো মন রে আল্লা করো সার নামের গুণে হইতে চাই ভবসিন্ধু পার ॥ তনের মাঝে আল্লা-নবি নাহি হয় ভিন সময় থাকিতে মন তুই তোরে চিন ॥ বাউল আবদুল করিম বলে মন পবিত্র করো এক…
দমে দমে পড়ো জিকির
দমে দমে পড়ো জিকির লাইলাহা ইল্লাল্লা নাম ছাড়া দম ছাড়ো যদি ঠেকবে হিসাবের বেলা ॥ একূল সেকূল দুজাহানে তরে যাবে নামের গুণে টের পেয়েছে আশেকগণে কোন কলে খেলে মৌলা ॥ মুর্শিদের আওয়াজের বলে বালকের কলব খোলে দমের কোঠায় চাবি দিলে দেখবে রে নুরের খেলা ॥ বন্দি হয়ে মায়াজালে ভবের জনম যায় বিফলে বাউল আবদুল করিম…
লাইলাহা ইল্লাল্লা মোহাম্মদ রাসুলুল্লা
লাইলাহা ইল্লাল্লা মোহাম্মদ রাসুলুল্লা নামের মালা জপো না ঐ নাম করো সার, ঘুচিবে আঁধার সময় গেলে আর হবে না ॥ স্বরূপে সাধন, শুদ্ধ করো মন মুর্শিদের চরণ ভজো না দমের কোঠায় দিয়া তালা ঐ নাম জপো নিরালা ত্রিতাপ জ্বালা রবে না ॥ নামে আছে প্রেমসুধা খাইলে রয় না ভবক্ষুধা আপন হতে খোদা জুদা ভেব না…
মুর্শিদের প্রেমবাজারে
মুর্শিদের প্রেমবাজারে কে যাবে রে আয় যেতে যদি হয় বিলম্ব নয় চল যাই সকালবেলায় ॥ মনে মনে যোগ পড়িলে সময়ে রাস্তা ধরিলে সুজনের সঙ্গ করিলে সুবাতাসে প্রাণ জুড়ায় ॥ সেই বাজারে যারা যাবে মন্ত্র নয় মন্ত্রণা পাবে বেচাকেনা ভাবে-ভাবে বিনা মূল্যে মাল বিকায় ॥ যার কাছে রয় মালের খনি সে যে মহাধনে ধনী মাল বিকায়…
মুর্শিদের কাছে আমি কেন যাই
মুর্শিদের কাছে আমি কেন যাই কার কাছে কী বলিব কেন তার গুণগান গাই ॥ আমি হলেম চিররোগী ভব-ব্যাধিতে ভুগি হয়েছি দোষের ভাগী কত মন্দ শুনি ॥ মুর্শিদের আশ্রয় নিলে মনপ্রাণ বিকাইয়া দিলে ভবব্যাধির ঔষধ মিলে এছাড়া আর উপায় নাই ॥ মুর্শিদ আঁধারের বাতি ভক্তজনের চিরসাথি ঔষধ হোমিওপ্যাথি খাইলে রয় না রোগ বালাই । অভক্ত তার…
তোরা আও আও রে
তোরা আও আও রে আশেক ভক্ত ভাই ইব্রাহিম মস্তান সাহেবের গুণগান গাই ॥ বিশ্বনাথ থানায় বাড়ি শ্রীপুরে বাসা পশ্চিম দিকে হাসন রাজার রঙের রামপাশা ॥ হাসন রাজা ছিলেন একজন মরমি কবি ইব্রাহিম মস্তান হলেন মারিফতের ছবি ॥ চেহারায় নুরের জ্যোতি দেখতে মনোহর বনজঙ্গলে ঘুরলেন কত ছেড়ে বাড়ি ঘর ॥ কী চাহিলেন কী পাইলেন এই ভাবনা…
আউলিয়া ইব্রাহিম মস্তান
আউলিয়া ইব্রাহিম মস্তান মোকাম শ্রীপুর ভক্ত হলে কাছে মিলে নইলে বহুদূর ॥ না জানি কী ভেবেছিলেন ঘরবাড়ি ছাড়িয়া দিলেন বন-জঙ্গল কত ঘুরিলেন কাটিয়ে মায়ার ডোর ॥ প্রেমের মালা দিয়া গলে আধ্যাত্মিক সাধনার বলে রঙবেরঙের খেলা খেলে ভক্তজনের মনচোর ॥ অটল পুরুষ মহামতি পির বলে রয়েছে খ্যাতি চেহারায় চান্দের জ্যোতি পেশানিতে ভাসে নুর ॥ মনে সদা…
মরি হায় হায় রে
মরি হায় হায় রে গুণগান গাই মৌলা বক্স মুন্সি সাহেবের গুণের সীমা নাই – মরি হায় হায় রে ॥ ধন্য মৌলা বক্স মুন্সি উকারগ্রামে বাড়ি কলির যুগে করে গেলেন আশ্চর্য ফকিরি— মরি হায় হায় রে ॥ শরিয়তে পাবন্দ ছিলেন মারিফতে রাজা কীভাবে কী করে গেলেন যায় না কিছু বোঝা— মরি হায় হায় রে ॥ ভক্তবৃন্দ…
প্রাণের প্রাণ মুর্শিদ আমার
প্রাণের প্রাণ মুর্শিদ আমার মৌলা বক্স নাম যাহার চরণেতে জানাই আমি সালাম হাজার হাজার ॥ যুগের শেষে এসে যখন জন্ম নিলেন এ ধরায় জেলা হয় সুনামগঞ্জ জন্মস্থান হয় উকারগাঁয় শরিয়তে পাবন্দ ছিলেন তরিকতের রাহাদার সুফি সাধক ছিলেন মারিফত করে বিচার ॥ শিষ্য ভক্ত আশেকগণ সবারে করে কাঙাল তেরোশো আটান্ন সনে করলেন তিনি ইন্তেকাল নুরের বাতি…
পিরানে পির আমার
পিরানে পির আমার আব্বাস কারি নাম যাহার হাজারো সালাম আমার সেই চরণে ॥ চরমহল্লা সাধকপুর ভক্তজনের মনচোর কাটিয়ে মায়ার ডোর রইলেন গোপনে ॥ আউলিয়া-সরদার করে ভেজিলেন পরোয়ারে স্মরণ করি শ্রদ্ধাভরে দিল-ইমানে ॥ পদছায়া যে পাইবে সর্বধনে ধনী হবে অনায়াসে তরে যাবে জিয়ন মরণে ॥ আমি কাঙাল দীনহীন আমায় না বাসিও ভিন ভাব-ভক্তির নাহি চিন পাব…
খাজা তোমার নামের ধ্বনি
খাজা তোমার নামের ধ্বনি জগৎ জুড়ে শুনতে পাই সবাই তোমায় ভালোবাসে হিন্দু-মুসলিম প্রভেদ নাই ॥ চিশতিয়া তরিকা তোমার আজমিরে রয়েছে মাজার ভক্তগণের প্রেমের বাজার প্রেমসাগরে খেলে লাই ॥ হয়ে তোমার প্রেমে পাগল আশেকে গায় প্রেমের গজল আছে এতে আসল-নকল ভক্তি বিনা মুক্তি নাই ॥ পড়ে ছয় রিপুর কবলে এ জনম গেল বিফলে বাউল আবদুল করিম…
ওগো আল্লার ওলি শাহপরান
ওগো আল্লার ওলি শাহপরান দয়াল বলে ভক্ত সবাই গায় যে তোমার গুণগান— আল্লার ওলি শাহপরান ॥ শাহজালালের সঙ্গী হলে মুখে আল্লা আল্লা বলে সিলেটে আসিলে চলে ছেড়ে দিয়ে জন্মস্থান ॥ ভোগী নয় ত্যাগী জানি তাই তো দিল-ইমানে মানি দূর করে দাও পেরেশানি করো তোমার দয়া দান ॥ বাউল আবদুল করিম বলে দয়াল তোমার দয়া হলে…
ওগো শাহপরান আউলিয়া
ওগো শাহপরান আউলিয়া এই দেশে আসিলায় কী ধন সঙ্গে নিয়া ॥ কী ধন দিতে কী ধন নিতে কী মনে ভাবিয়া জন্মস্থান ছেড়ে আইলায় সর্বত্যাগী হইয়া ॥ মজাররদে গুলি তুমি ভূমি গুণে শুণিয়া দুই কূলের বাদশাহ হলে কোন পরশ পাইয়া ॥ প্রেমিক ভক্ত আশেক যারা তোমার নাম শুনিয়া দরগা জিয়ারতে আসে দেওয়ানা হইয়া ॥ না দেখিয়া…
ইয়ামন হতে আইলায় দয়াল
ইয়ামন হতে আইলায় দয়াল শাহজালাল আউলিয়া যুগের আঁধার মাঝে নুরের আলো জ্বালাইয়া ॥ আউলিয়া পরশ জানি নায়েবে রাসুল মানি আশেকের শিরোমণি তুমি গুণে গুণিয়া ॥ প্রেমিকজনে প্রেমখেলায় আমি আছি ভবজ্বালায় উদ্ধারিয়া লও না আমায় প্রেমের নৌকায় তুলিয়া ॥ আশেক-প্রেমিক-ভক্তগণে শান্তি পায় গুণগানে আবদুল করিম দীনহীনে কাঁদে জনম ভরিয়া ॥ আপনার পছন্দের তালিকায় যোগ করুন
সর্বধনে ধনী তুমি
সর্বধনে ধনী তুমি আমি যে কাঙাল আউলিয়া শাহজালাল ॥ পাক নুরেতে নুরনবি সেই নুরে তোমার ছবি প্রশংসা কী বলবে কবি ভাবিয়া বেহাল ॥ ছিলা তুমি ইয়ামনি অমূল্য পরশমণি তুমি যে রহমতের খনি কুদরত কামাল ॥ এ দেশবাসীর ভাগ্য ভালো আঁধারে পাইল আলো ভক্তগণে লুটে নিল প্রেম ভাণ্ডারের মাল ॥ পাগল আবদুল করিম বলে আশায় জীবন…
নবির ভেদ কে জানতে পারে
নবির ভেদ কে জানতে পারে জানি মনপ্রাণে এ তিনভুবনে নবির সমান খোদায় কেউরে না করে ॥ আপে সাঁই নিরাঞ্জন প্রেমেরই কারণ নবিকে করলেন সৃজন আপনার নুরে । আপে পরোয়ারে আদর করে দোস্ত বলে ডাকলেন যারে ॥ সেতারার ছিলেন সাজ হজরত আলি মাথার তাজ দুই ইমাম কানের দুলদুল ছিলেন দু-ধারে মা জহুরা গলার হার ছিলেন কী…
আমি কী করিব রে
আমি কী করিব রে প্রাণনাথ তুমি বিনে সোনার অঙ্গ পুড়ে আঙ্গার হলো দিনে-দিনে রে প্ৰাণনাথ তুমি বিনে ॥ আসা-যাওয়া সার হয়েছে নিয়তির বিধানে জন্ম-জরা-যমযাতনা সব তোমার অধীনে রে প্রাণনাথ তুমি বিনে ॥ আশেক যারা জানে তারা মন দিয়া মন কিনে প্রেমসাগরে বাইলে বড়শি ধরে রসের মীনে রে প্রাণনাথ তুমি বিনে ॥ চির-অপরাধী আমি বাঁধা আছি…
দয়াল বলে ডাকে তোমায় কাঙালে
দয়াল বলে ডাকে তোমায় কাঙালে মুক্ত করে দাও গো দয়াল বন্দি আছি মায়াজালে ॥ তুমি যে হও জগৎস্বামী তুমি সবার অন্তর্যামী এই আবেদন করি আমি পাই যেন অন্তিমকালে ॥ যখন যে বিপদে পড়ে তার ভাষায় সে স্মরণ করে প্রাণ খুলে যে বলতে পারে নিজের ভাষায় বলিলে ॥ বিফলে জীবন চলে যায় উদ্ধারিয়া লও গো আমায়…
ডাকলে দয়া করো বলে
ডাকলে দয়া করো বলে সকলের জানা তাই তো এত ডাকাডাকি সবাই চায় তোমার করুণা ॥ মকরম তোমার ভক্ত ছিল ফেরেস্তার মাস্টারি নিল একটি কথায় গোল বাঁধিল রেহাই দিলায় না ॥ হুসেনকে কারবালাতে নিদারুণ পিপাসাতে এক বিন্দু পানি দিতে কে করল মানা ॥ নাম দিয়াছ দয়াল বলে শিশু মরে মায়ের কোলে পাষাণে মাথা ভাঙিলে দয়া করো…
তোমার খেলা বুঝে ওঠা ভার
তোমার খেলা বুঝে ওঠা ভার খেলা কী চমৎকার তোমার খেলা বুঝে ওঠা ভার । অন্তর্যামী আছ তুমি এই বিশ্ব ভুলের ভূমি আমি নই তুমি সর্বসার- খেলা কী চমৎকার ॥ তোমার ইচ্ছায় এ সংসারে সৃজিলে আদম-হাওয়ারে বসাইতে এই ভবের বাজার । আদম গড়া হলে পরে আদমকে সজিদা করে ফেরেস্তাগণ হুকুমে তোমার ॥ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু জানি…
এ জগতে ডাকে তোমায়
এ জগতে ডাকে তোমায় কত ভাবে কত জনে কেহ ডাকে তন্ত্রে-মন্ত্রে কেহ ডাকে আকুল প্রাণে ॥ তুমি বলেছ নাকি যে ডাকে তার কাছে থাকি তাই তো এত ডাকাডাকি নইলে ডাকবে কী কারণে ॥ বসিয়া ধৰ্মশালাতে ডাকে যার যে বিধানমতে সাড়া দাও কার ডাকেতে সেই খবর কেউ না জানে ॥ এই যে দুনিয়াদারি কেউ ভেবেছে স্বর্গপুরী…
জন্মিয়া শুনেছি ভবে তুমি আছ
জন্মিয়া শুনেছি ভবে তুমি আছ তুমি চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা আকাশ বাতাস সৃজিয়াছ ॥ এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড গড়ে জীবসমষ্টি সৃষ্টি করে প্রাণের প্রাণ হয়ে পরে মিছরিতে মিঠা সেজেছ ॥ ছয় রিপুর যন্ত্রণায় পড়ে ঘুরছে জীব এই সংসারে ধর্মাধর্ম বিচার করে কয়জনকে সে জ্ঞান দিয়াছ ॥ তবু তোমায় সবাই ডাকে যেভাবে যেখানে থাকে কাঙাল যারা আশা রাখে…
দয়া করো দয়াল তোমার দয়ার বলে
দয়া করো দয়াল তোমার দয়ার বলে কী দিয়া সেবিবে চরণ কাঙালে জীবন-সাফল্য তোমায় পাইলে – কী দিয়া সেবিবে চরণ কাঙালে ॥ কত ধনী-মানী জ্ঞানী-গুণী তোমার আশায় বাদশাহি ছাড়িয়া কেহ জঙ্গলায় পাইতে তোমায় জীবন-যৌবন দিয়াছে ঢেলে – কী দিয়া সেবিবে চরণ কাঙালে ॥ রাবেয়া সঁপিয়া দিলেন দেহ-প্রাণ-মন বলকের ইব্রাহিম ছাড়েন সিংহাসন ওয়াসকরনি প্রেমিক সুজন জঙ্গলে —…
দয়াল নাম শুনিয়া
দয়াল নাম শুনিয়া আশায় আছি চাইয়া দয়ার বলে নেও না কোলে কাঙাল জানিয়া ॥ জমি বাড়ি টাকা কড়ি এই সমস্ত লইয়া কামিনী-কাঞ্চনের নেশায় আছি বন্দি হইয়া ॥ জালে বন্দি মীন বাঁচবে কয়দিন জল গেলে শুকাইয়া বেলা গেলে সন্ধ্যা হলে আঁধার যাবে হইয়া ॥ ভাই-বন্ধুগণ কেউ নয় আপন দেখি যে ভাবিয়া সবাই একদিন যাইতে হবে এই…
বিশ্বপতি খোদা তোমার
বিশ্বপতি খোদা তোমার মহিমা অপার রাখো-মারো ভাঙো-গড়ো তুমি বিনে কেবা কার॥ সবাই দেখি যার-তার ভাবে এ জগতের সৃষ্ট জীবে নামের মহিমা সবে গাইতেছে অনিবার॥ নামের ধ্বনি সর্বস্থানে ওঠে বিরাজ করো প্রতি ঘটে কুদরতে বুদ্ধি না খাটে ভাবিলে নাই কূলকিনার॥ স্বর্গ-মর্ত্য-আকাশ-পাতালে আলো-আঁধারে কি অনল-অনিলে কুল্লেশাইন মুহিত তুমি অখণ্ড মণ্ডলাকার॥ মন মজাও হে তোমার প্রেমে নাম যে…
দয়াল তুমি রাহমান রাহিম
দয়াল তুমি রাহমান রাহিম দয়া করো ক্ষমা করো তুমি আকামুল হাকিম॥ পড়িয়া এই ভবের ধাঁধায় জীবন আমার বিফলে যায় তুমি বিনা আমি অসহায় এই ভবে হলেম এতিম॥ তালাচাবি তোমার কাছে আমার বলতে কী ধন আছে তোমার খাইয়া জীবন বাঁচে আমি যে চির খাদিম॥ রাখো চরণ ছায়াতলে দিও না দূরে ঠেলে তুমি দয়াল আপন হলে আর…
আল্লা গাফুরুর রাহিম নামে ডাকি তোমারে
আল্লা গাফুরুর রাহিম নামে ডাকি তোমারে ক্ষমা করো তুমি আমারে । ভুল করেছি পদে পদে দরবারে ক্ষমা করো তুমি আমারে ॥ রিপুর বশে কত করেছি গুনা কবিরা সগিরা আর জানা-অজানা করজোড়ে চাহি ফানা নতশিরে— ক্ষমা করো তুমি আমারে ॥ দয়া করে তুমি নিজে বলিলা লা তাকনাতু মির রহমতিল্লা আশ্বাসবাণী দিলা সবারে – ক্ষমা করো তুমি…
ওহে সর্বশক্তি, দাও আমারে মুক্তি
ওহে সর্বশক্তি, দাও আমারে মুক্তি নাই ভাবভক্তি আমি গুনাগার ॥ ভক্তিভরে যেজন তোমারে করে স্মরণ পুরাও তার আকিঞ্চন, তুমি হও তার ডাকি সকাতরে দয়া করো আমারে এ ভবসাগরে করে দাও পার ॥ বিশ্বব্যাপিয়া রয়েছ ছাপিয়া পাই না খুঁজিয়া তোমার দিদার প্রতি ঘটে ঘটে তব ধ্বনি ওঠে হাটে মাঠে ঘাটে শুনি সে ঝংকার ॥ আমি অতি…
বিসমিল্লা আলহামদুলিল্লা
বিসমিল্লা আলহামদুলিল্লা প্রশংসা আল্লার এ বিশ্বের মালিক মৌলা সে বিনে আর কেবা কার ॥ সেই সে পবিত্রজনে স্মরণ করি দিল-ইমানে নুরনবি পাক-পাঞ্জাতনে দরুদ সালাম হাজারবার ॥ নবি ওলি পির পয়গাম্বার আউলিয়া আম্বিয়া আল্লার সবার কাছে সালাম আমার আমি বান্দা গুনাগার ॥ পির-মুর্শিদের চরণ ধরে পিতামাতা ওস্তাদেরে শ্রদ্ধাভক্তি সহকারে স্মরণ করি বারে বার ॥ এই দুনিয়া…
সোনার পিঞ্জরায় কাক ভরিলে সুবোল বোলে না
সোনার পিঞ্জরায় কাক ভরিলে সুবোল বোলে না। হায় রে কুকুররে কেউ আদর করে ঘৃত ননী সামনে দিলে মুখে না তোলে পাড়ায় পাড়ায় ঘোরেফিরে বিষ্ঠা ছাড়া বুঝে না । পচা-গলার গন্ধ গো পেয়ে পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ দেখে তাকিয়ে, খোঁজ করিয়া আহার করে জাতের স্বভাব ছাড়ে না। হায় রে হায় দেখলাম কত এ জগৎজুড়ি সত্য কথার…
সোনাবন্ধু রে, তোর সনে কী কথা ছিল
সোনাবন্ধু রে, তোর সনে কী কথা ছিল তোর পিরিতে নয়ন দিয়া আমার জাতি-কুলমান গেল ॥ বন্ধু রে, যা বলেছিলে গোপনে কুঞ্জবনে যখন কেউ না ছিল খেলিয়া প্রেমের খেলা আমায় দোষী কেন বানাইলা দোষের ভাগী কলঙ্কিনী এখন আমি কোথায় যাব বলো ॥ বন্ধু রে, চাঁদবরণ মুখের হাসি দেখে জুড়ায় দাসীর প্রাণ তুমি বিনে কে আছে সম্বল…
সোনাবন্ধে আমায় করলো উদাসিনী
সোনাবন্ধে আমায় করলো উদাসিনী তোর কারণে নিশি-দিনে রে বন্ধু আঁখির ঝরে পানি রে। প্রথম প্রেম করেছিলাম রে বন্ধু তুমি আর আমি এখন কেন সেইসব কথা লোকসমাজে শুনি রে । ধন দিলাম মন দিলাম রে বন্ধু দিলাম নয়ন দুইখানি লোকসমাজে হইলাম দোষী কইরা কানাকানি রে। আগে যদি জানতাম রে বন্ধু ও বন্ধু ছাড়বে অভাগিনী মাথার কেশ…
সোনাবন্ধু আমারে কী মায়া লাগাইয়া গেলা রে
সোনাবন্ধু আমারে কী মায়া লাগাইয়া গেলা রে । আজ আসবে কাল আসবে বলে আমায় ফাঁকি দিলে বন্ধু রে অভাগিনীর বুক ভাসে দুই নয়নের জলে রে। বাসর সাজাইলাম আমি নানান জাতি ফুলে বন্ধু রে নিশি পোহাইয়া গেল কোকিল ডাকে ডালে রে। থাকো বন্ধু সুখে থাকো এই উকিলে বলে বন্ধু রে থাকতে তোমায় না পাইলে পাইবো কি…
সুজন বন্ধু রে আরে ও বন্ধু কোন বা দেশে থাকো
সুজন বন্ধু রে আরে ও বন্ধু কোন বা দেশে থাকো এই দাসীরে কান্দাইয়া রে কোন দাসীর মন রাখো সুজন বন্ধু রে। প্রেম শিখাইয়া চইলা গেলা রে আরে ও বন্ধু লাগাইয়া মমতা বুকের ওপর দিয়া গেলা রে বিনা কাষ্ঠের চিতা সুজন বন্ধু রে। জ্যৈষ্ঠ মাসে টলমল করে আরে ও বন্ধু কচুপাতার পানি সেই মতন ঝরিয়া পড়ে…
সারা জনম কাটাইলাম নগরে নগরে
সারা জনম কাটাইলাম নগরে নগরে সুজন বন্ধু রে আর কী ভরসা মোর অন্তরে ॥ বন্ধু রে, আমি ঘরবাড়ি ত্যাজ্য করি শুধু তোমার আশা করি হইলাম বৈরী ঘরে আর বাহিরেও, ও বন্ধু রে কইতো মন্দ ভাবছিলাম না তুমি যদি বুঝতে বেদনা আমার হিয়ার বেদন জানবে কি আর পরে॥ বন্ধু রে, জানতাম যদি পরে তুমি আমারে করবে…
সাধের বাজার ভাইঙা যায়
সাধের বাজার ভাইঙা যায় হায় হায় হায় সন্ধ্যাকালে জিনিস পাওয়া দায়। মন রে প্রেমবাজারে বেচাকেনা মতি রূপা হীরা সোনা অপ্রেমিক যাইতে পারে না প্রেমিক যারা তারা জিনিস কিনতে পায় অবিশ্বাসী কানা যারা তারা বাজারে ঘোরায় । মন রে আমায় মায়াবিনী পাইয়া মারিল সদায় ঘুরাইয়া কী উত্তর দিব যাইয়া যেদিন মহাজন জিগায়, শেষ দিনে উকিল তোমার…
সখি ধইরো গো আমায়
সখি ধইরো গো আমায় কৃষ্ণ অনুরাগে যদি আমার প্রাণ যায় ॥ সখি গো, ললিতায় লোলক নেও গো খুলে নেও গো চুড়ি চন্দ্রায় নেও গো চন্দ্রহার সখা নেও অঙ্গুরি দেহের বসন নেও গো দেবী চম্পহার সবাই মিলে পাপিনীরে দেও গো বিদায় ॥ সখি গো, আমি মইলে ওই করিও না ভাসাইও জলে আমারে বাঁধিয়া রাইখো তমালেরই ডালে…
সখি তোরা ধইরা ধইরা নে আমারে ধীরে ধীরে
সখি তোরা ধইরা ধইরা নে আমারে ধীরে ধীরে আমার হাঁইট্টা যাইতে পাও চলে না। দাঁড়াইলে মাথা ঘোরে। সখি গো সখি তোরা আমার হইয়া প্রাণবন্ধুয়ারে দে আনিয়া গো সে বিনে আর পোড়া দেহ কেমনে জুড়াই রে। সখি গো সখি কলঙ্কিনী বলে সবে মইলাম আমি লোকসমাজে গো যে পোড়ায় অন্তর পোড়া দেখাইবো আর কারে গো সখি গো…
সখি তোরা কেউ গেলে না রে মথুরা নগর
সখি তোরা কেউ গেলে না রে মথুরা নগর আনতে আমার প্রাণবন্ধুরে দেখতাম একনজর রে ॥ হাতে বাঁশি মাথে চূড়া এই তো বন্ধের চিন্ নামের মালা গলায় লইয়া সাজলাম দীনহীন রে ॥ মথুরাতে কত নারী স্বামীর গৌরব করে আমার কি আর লয় না মনে রূপ দেখাইতাম তারে রে ॥ কত কত মানুষ মরে কত কত রোগে…
শ্যামচার আর কতকাল
শ্যামচার আর কতকাল রবো তোমার আশায় পাসরিতে নাহি পারি সদায় জাগে অন্তরায়। ছেড়ে দিয়া ঘরবাড়ি পাশরিলাম সহচরী রে শুধু তোমার আশা করি কেউ নাই আমার এ ধরায় । তোমার এই প্রেমযাতনা অভাগীর প্রাণে সহে না রে কেন আর এই ছলনা ভুইলা আছো কার বাসায় । প্রেমফাঁসি গলে লইয়া উকিল যদি যায় মরিয়া রে হয় যদি…
শোনো রে দারুণ কোকিল চুপ করিয়া থাকো
শোনো রে দারুণ কোকিল চুপ করিয়া থাকো যেই দেশে তোর প্রেমের মাধব সেই দেশে গিয়া ডাকো। বন্ধের কথা মনে হইলে ফেটে যায় বুক না জানি কার আশা পুরায় আমায় দিয়া দুখ । ফাল্গুন-চৈত্র দুই মাস গেল আইলো রে বৈশাখ না দেখিয়া কেমনে রবো বন্ধের চান্দমুখ। উকিলের কপাল মন্দ বিধি হইয়াছে বিমুখ আমার বন্ধু যদি থাকে…
লিলুয়া বাতাসে প্রাণ না জুড়ায় না জুড়ায়
লিলুয়া বাতাসে প্রাণ না জুড়ায় না জুড়ায় একা ঘরে ঘুম আসে না শুইলে বিছানায় ॥ নিষেধ করি ওরে হাওয়া লাগিস না মোর গায় যার পিরিতে পোড়া অঙ্গ তারে মনে চায় ॥ ঘরে আর বাহিরে উকিল ঘুরি সর্বদায় এমন বান্ধব নাই রে আমার বন্ধুরে দেখায় ॥ আপনার পছন্দের তালিকায় যোগ করুন
ললিতে, যাও গো শ্যামকে আনিতে
ললিতে, যাও গো শ্যামকে আনিতে শ্যাম বিনে কী ধন আছে সখি দেখে নয়ন জুড়াইতে। ছিলেন শ্যামের আদরিণী শ্যাম গৌরবে গরবিনী না পেয়ে শ্যাম গুণমণি সখি ঝাঁপ দিব যমুনাতে । আমার মরণকালে না ভাসাইও গঙার জলে গো আমায় বেঁধে রেখো নীল বসনে সখি তমালেরই ডালেতে। যদি আসে কোনোকালে দেখাইও হস্ত তুলে গো উকিলের মৃতদেহে প্রাণ আসিবে…
রূপে মারিস না রে কামবাণ
রূপে মারিস না রে কামবাণ থাকিস রে সাবধান, হিসাব-নিকাশ পুঞ্জি-পাট্টা ঠিক রাখিস নায়ের চালান । রূপের ঘরে কুম্ভীর থাকে ভক্ষণ করে যদি কুম্ভীরি দেখে রে মারে মানুষ লাখে লাখে না জানলে তাহার সন্ধান । যে রূপে মোর নয়ন-তারা করুণ রসে বহায় ধারা রে দমের ঘরে দিয়া তালা ইল্লাল্লাহু দম টান । রূপের ঘরে অমূল্য ধন…
রজনী, রজনী পোহাইলো রে সখি
রজনী, রজনী পোহাইলো রে সখি শ্যাম তো কুঞ্জেতে আইলো না । কুহু কুহু স্বরে রে ডাকিছে কোকিল শোনো না । বাসরশয্যা হলো রে বাসি না আসলো মোর কালো-শশী বুঝল না বেদনা, না জানি কার সঙ্গ পাইয়া আমারে দেখিল না ৷ জানতাম যদি হইবে রে এমন তবে কি দেই জীবন-যৌবন রে আপন জানিয়া, পর কোনো দিন…